‘আর আল্লাহর জন্য রয়েছে সব উত্তম নাম’ আয়াতের অর্থ

আর আল্লাহর জন্য রয়েছে সব উত্তম নাম সমূহ।

তৃতীয়ত: নাম ও গুণাবলীর মাধ্যমে আল্লাহর পরিচয় লাভ করুন:

{আর আল্লাহর জন্য রয়েছে সব উত্তম নাম। কাজেই সে নাম ধরেই তাঁকে ডাক। আর তাদেরকে বর্জন কর, যারা তাঁর নামের ব্যাপারে বাঁকা পথে চলে। তারা নিজেদের কৃতকর্মের ফল শীঘ্রই পাবে।} [সূরা: আল-আ’রাফ, আয়াত: ১৮০]

আল্লাহ তা'আলা বলেন: {আর আল্লাহর জন্য রয়েছে সব উত্তম নাম। কাজেই সে নাম ধরেই তাঁকে ডাক। আর তাদেরকে বর্জন কর, যারা তাঁর নামের ব্যাপারে বাঁকা পথে চলে। তারা নিজেদের কৃতকর্মের ফল শীঘ্রই পাবে।}
[সূরা: আল-আ’রাফ, আয়াত: ১৮০]

১- {আর আল্লাহর জন্য রয়েছে সব উত্তম নাম সমূহ}, এর অর্থ।

মহান প্রভুর সব নামই প্রশংসামূলক, আল্লাহ তা'আলা এর সবগুলিকেই সুন্দরতম ও চমৎকার বলে বর্ণনা করেছেন। ইরশাদ হয়েছে: {আর আল্লাহর জন্য রয়েছে সব উত্তম নাম। কাজেই সে নাম ধরেই তাঁকে ডাক। আর তাদেরকে বর্জন কর, যারা তাঁর নামের ব্যাপারে বাঁকা পথে চলে। তারা নিজেদের কৃতকর্মের ফল শীঘ্রই পাবে।}
[সূরা: আল-আ’রাফ, আয়াত: ১৮০।]

আল্লাহর নামসমূহ শুধুমাত্র শব্দগতভাবেই সুন্দর নয়। বরং সেগুলো পরিপূর্ণ গুণাবলীর প্রতি ইঙ্গিত বহন করে। সুতরাং তাঁর সকল নামই হচ্ছে প্রশংসামূলক, মহিমাপ্রকাশক ও মর্যাদাপ্রকাশক। একারণেই সেগুলোকে বলা হয়েছে সুন্দর। আল্লাহর সকল গুণাবলীই হচ্ছে পরিপূর্ণ গুণাবলী। সকল স্তুতিই হচ্ছে মহিমামূলক। তাঁর সকল কাজই প্রজ্ঞাপূর্ণ, করুণানির্ভর, কল্যাণকর ও ন্যয়নিষ্ঠ।

ঈমানের একটি অংশ হচ্ছে আল্লাহর সকল নাম ও গুণাবলীর প্রতি বিশ্বাস রাখা। আল্লাহর কিতাব ও তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সহীহ হাদীসের আলোকে আল্লাহর নাম ও গুনাবলীর প্রতি ঈমানের দুটি ভিত্তি রয়েছে।

প্রথম মূলনীতি:

কোন প্রকার বিকৃতি, সংকোচন, সাদৃশ্য কিংবা সমকক্ষ স্থাপন ব্যতিরেকে আল্লাহর মহত্বের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ ও বর্ণিত সকল নাম আল্লাহর জন্য সাব্যস্ত করা। যেমন আল্লাহ তা'আলা বলেন: {কোন কিছুই তাঁর অনুরূপ নয়। তিনি সব শুনেন, সব দেখেন।}[সূরা: আশ-শুরা, আয়াত: ১১]

দ্বিতীয় মূলনীতি:

সে সকল নামের অর্থ বুঝা এবং সেগুলোর মর্ম যেসব গুণাবলীকে শামিল করে সেগুলোকে আল্লাহর জন্য সাব্যস্ত করা। তবে কোন অবস্থাতেই আল্লাহর সেসব গুন ও বৈশিষ্ট্যের ধরণ নিয়ে কোন ব্যখ্যায় পতিত না হওয়া। আল্লাহ তা'আলা বলেন: {তিনি জানেন যা কিছু তাদের সামনে ও পশ্চাতে আছে এবং তারা তাকে জ্ঞান দ্বারা আয়ত্ত করতে পারে না।}[সূরা: ত্বহা, আয়াত: ১১০।]

আল্লাহ তা'আলা তাঁর বান্দাদেরকে তাঁর সুন্দর নামসমূহ ও সুউচ্চ গুণাবলীর সাথে পরিচিতি করার উদ্দেশ্যও বর্ণনা করেছেন। আর সে উদ্দেশ্য হলো: এগুলোর মাধ্যমে তাঁর ইবাদাত করা। যেমন আল্লাহ তা'আলা বলেন:{বলুন: আল্লাহ বলে আহবান কর কিংবা রহমান বলে, যে নামেই আহবান কর না কেন, সব সুন্দর নাম তাঁরই।} [সূরা: আল-ইসরা, আয়াত: ১১০।]

আল্লাহ তা'আলা বলেন: {আর আল্লাহর জন্য রয়েছে সব উত্তম নাম। কাজেই সে নাম ধরেই তাঁকে ডাক। আর তাদেরকে বর্জন কর, যারা তাঁর নামের ব্যাপারে বাঁকা পথে চলে। তারা নিজেদের কৃতকর্মের ফল শীঘ্রই পাবে।}[সূরা: আল-আ’রাফ, আয়াত: ১৮০]

২- {সে নাম ধরেই তাঁকে ডাক} এর উদ্দেশ্য:

আল্লাহর সুন্দর নামগুলোর মাধ্যমে তাঁকে ডাকার দু'টি দিক আছে। কোন কিছু চাওয়ার আবেদনে আল্লাহকে ডাকা, যেমন: হে আল্লাহ! আমাকে দান করুন। হে রহিম! আমাকে রহমত করুন। হে কারীম! আমাকে সম্মানিত করুন। দ্বিতীয়ত: কোন চাওয়া সম্বলিত দু'আ ছাড়াই নিছক প্রশংসা ও ইবাদাতের ক্ষেত্রে আল্লাহর সেসব নামে তাঁকে আহবান করা। যেমন: আল্লাহর গুনবাচক নাম সমূহের মাধ্যমে তাঁর মহিমা বর্ণনা করা। আর সুন্দর গুন ও নামের অধিকারী মহান আল্লাহর মহীমাকীর্তন একাধারে যবান ও অন্তর উভয়টি দ্বারায়ই হতে পারে।

৩- {আর তাদেরকে বর্জন কর, যারা তাঁর নামের ব্যাপারে বাঁকা পথে চলে} এর উদ্দেশ্য:

আল্লাহর নামের অস্বীকৃতি: কুরআনে বর্ণিত আল্লাহর কোন গুনবাচক বিষয়কে অস্বীকার করা, অথবা আল্লাহর কোন গুনকে তাঁর সৃষ্টির সাথে তুলনা করা, কিংবা তাঁর গুণ বা নামের সাথে এমন অসামঞ্জস্য বিষয় যুক্ত ও ব্যখ্যা করা- যার অস্তিত্ব কুরআন-সুন্নাহর কোথাও নেই।



Tags: