ইসলামে ইখলাসের গুরুত্ব

ইখলাসের অর্থ

ইখলাসের অর্থ:

যে ব্যক্তি আল্লাহকে চিনতে পারে সে তাঁকে এবং তাঁর বান্দাকে ভালবাসে এবং তাঁর প্রতি একনিষ্ঠ হয়।

ইখলাস হলো একনিষ্ট ব্যক্তির ঢাল, মুমিনের রূহ এবং বান্দা ও তার রবের মাঝে গোপন সম্পর্ক। ইহা অসওয়াসা এবং অহংকার ধ্বংস করে। ইখলাস মানে হচ্ছে: আল্লাহ তা'আলার উদ্দেশ্যে ইবাদাত করা। এক্ষেত্রে অন্য কারো প্রতি ভ্রূক্ষেপ না থাকা। ইবাদাতের ক্ষেত্রে আপনার অন্তর অন্য কাউকে কামনা করবে না, আপনি মানুষের কাছে প্রশংসা বা খ্যাতি আশা করবেন না এবং মহান স্রষ্টার পক্ষ হতেই প্রতিদানের অপেক্ষা করবেন, এটাই হলো ইখলাস।

ইখলাস হল আমলের পূর্ণতা ও সৌন্দর্য। এর মূল্য অতুলনীয়। ইহা আনুগত্যের ক্ষেত্রে আল্লাহর প্রতি বান্দাকে একনিষ্ঠ বানিয়ে দেয়। মহান স্রষ্টার প্রতি বান্দার অন্তরে পূর্ণ মনোযোগ থাকার কারণে অন্য কারো প্রতি ভ্রুক্ষেপ করার কথা তার মাথায় আসে না। তার মনে মননে কেবলই আল্লাহ তা'আলার সন্তষ্টি অর্জনের ব্যাকুলতা থাকে, আল্লাহ তা'আলার কাছেই প্রতিদান আশা করে এবং এর ফলশ্রুতিতে আল্লাহ তা'আলাই তার প্রতিদান দেন। আল্লাহ ব্যতীত অন্যকিছু তার কাছে ধূলিকণার মর্যাদাও রাখে না। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন: «প্রত্যেক কাজ নিয়তের সাথে সম্পর্কিত। আর মানুষ তার নিয়ত অনুযায়ী ফল পাবে। তাই যার হিজরত হবে দুনিয়া লাভের অথবা কোন নারীকে বিয়ে করার উদ্দেশ্যে, সেই উদ্দেশ্যই হবে তার হিজরতের প্রাপ্য।» (-বোখারী।)

আইয়ূব সাখতিয়ানি সারা রাত জাগ্রত থাকতেন এবং তা গোপন রাখতেন। যখন ভোর হতো তখন তিনি সজোরে হাঁক দিতেন, যেন তিনি এইমাত্র জাগ্রত হলেন।

ইখলাসের স্তর:

দ্বীনের মাঝে ইখলাসের স্থান অনেক উঁচু। এর সমকক্ষ অন্য কিছু নেই। আমল ইখলাস ব্যতীত কবুল হয় না। আল্লাহ তা'আলা পবিত্র কুরআনের অনেক আয়াতে ইখলাসের কথা উল্লেখ করেছেন। যেমন আল্লাহ তা'আলা ইরশাদ করেছেন: {তাদেরকে এছাড়া কোন নির্দেশ করা হয়নি যে, তারা খাঁটি মনে একনিষ্ঠভাবে আল্লাহর এবাদত করবে}
[সূরা: আল-বায়্যিনাহ, আয়াত: ৫]

আল্লাহ তা'আলা ইরশাদ করেছেন: {আপনি বলুন: আমার নামায, আমার কোরবাণী এবং আমার জীবন ও মরন বিশ্ব-প্রতিপালক আল্লাহরই জন্যে। তাঁর কোন অংশীদার নেই। আমি তাই আদিষ্ট হয়েছি এবং আমি প্রথম আনুগত্যশীল।}
[সূরা: আল আন’আম, আয়াত: ১৬২- ১৬৩]

আল্লাহ তা'আলা ইরশাদ করেছেন: {যিনি সৃষ্টি করেছেন মরণ ও জীবন, যাতে তোমাদেরকে পরীক্ষা করেন-কে তোমাদের মধ্যে কর্মে শ্রেষ্ঠ?}
[সূরা: আল মুল্‌ক, আয়াত: ২]

আল্লাহ তা'আলা ইরশাদ করেছেন: {আমি আপনার প্রতি এ কিতাব যথার্থরূপে নাযিল করেছি। অতএব, আপনি নিষ্ঠার সাথে আল্লাহর এবাদত করুন। জেনে রাখুন, নিষ্ঠাপূর্ণ এবাদত আল্লাহরই নিমিত্ত।}
[সূরা: আয যুমার, আয়াত: ২- ৩]

আল্লাহ তা'আলা ইরশাদ করেছেন: {অতএব, যে ব্যক্তি তার পালনকর্তার সাক্ষাত কামনা করে, সে যেন, সৎকর্ম সম্পাদন করে এবং তার পালনকর্তার এবাদতে কাউকে শরীক না করে।}
[ সূরা: আল কাহাফ, আয়াত: ১১০।]



Tags: